রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ০৫:১৬ অপরাহ্ন
সাবেক প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহার ব্যাংক হিসাবে অস্বাভাবিক লেনদেনের অভিযোগে তদন্ত শুরু করেছে দুদক, এস কে সিনহার হিসাবে চার কোটি টাকার পে-অর্ডার জমা দেওয়ার অভিযোগে ব্যবসায়ী নিরঞ্জন সাহা ও মো. শাহজাহানকে ৬ মে দুদকে তলব করেছে।
বুধবার দুপুরে ব্যবসায়ী নিরঞ্জন সাহা ও মো. শাহজাহানকে ৬ মে দুদকে তলব করার বিষয়টি জানাজানি হয়। নিরঞ্জন চন্দ্র সাহা এবং মো: শাহজাহান নামে এই দুই ব্যক্তির ব্যাংক অ্যাকাউন্ট থেকে সুরেন্দ্র কুমার সিনহার ব্যাংক হিসাবে ৪ কোটি টাকার পে অর্ডার জমা হয়েছে বলে জানায় দুদক।
গত আড়াই বছর সুপ্রিম কোর্টের সোনালী ব্যাংক শাখায় সুরেন্দ্র কুমার সিনহার ব্যাংক অ্যাকাউন্টে জমা হয়েছে সাড়ে পাঁচ কোটি টাকারও বেশি। এ সময় বেতন ছাড়াও টাকা জমা হয়েছে ২৬ বার। এর মধ্যে গত বছরের ৮ই নভেম্বর ফারমার্স ব্যাংকের গুলশান শাখা থেকে মো. শাহজাহান ও নিরঞ্জন চন্দ্র সাহার ঋণ অ্যাকাউন্ট থেকে চার কোটি টাকার পে-অর্ডার প্রধান বিচারপতি্র নামে ইস্যু করা হয়। এ দুই ব্যক্তির আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে গত বছরের ৬ নভেম্বর ফারমার্স ব্যাংকের গুলশান শাখায় দু’টি ঋণ অ্যাকাউন্ট খোলা হয়। ওই ব্যাংক হিসাবে প্রধান বিচারপতির উত্তরার বাড়ির ঠিকানা লেখা রয়েছে।
নিরঞ্জন চন্দ্র সাহা এবং মো: শাহজাহান এই দুইজনেরই স্থায়ী ঠিকানা প্রধান বিচারপতির সাবেক ব্যক্তিগত সহকারি রঞ্জিতের গ্রামের বাড়ি টাঙ্গাইলের ধনবাড়ি এলাকায়। রঞ্জিত বর্তমানে সিঙ্গাপুর প্রবাসী। সিঙ্গাপুর যাওয়ার আগে তিনি প্রধান বিচারপতির উত্তরার বাড়িতেই থাকতেন।
ষোড়শ সংশোধনী বাতিলের রায় নিয়ে ক্ষমতাসীনদের তোপের মুখে এক মাসের বেশি ছুটি নিয়ে গত ১৩ অক্টোবর বিদেশে যান বিচারপতি সিনহা। সেই ছুটি শেষে গত শনিবার তার পদত্যাগপত্র পাওয়ার কথা জানায় বঙ্গভবন।
২০১৫ সালের ১৭ জানুয়ারি দেশের ২১তম প্রধান বিচারপতি হিসেবে শপথ নেন এস কে সিনহা। বয়স অনুযায়ী ২০১৮ সালের ৩১ জানুয়ারি তার অবসরে যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু পদত্যাগের মধ্যে দিয়ে ৮১ দিন আগেই তার কার্যকাল শেষ হয়।
বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর ২১ জন বিচারক প্রধান বিচারপতির পদে অধিষ্ঠিত হয়েছিলেন, তাদের মধ্যে বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহাই প্রথম পদত্যাগ করলেন। দায়িত্বে থাকা অবস্থায় বাংলাদেশে আর কোনো প্রধান বিচারপতিকে নিয়ে প্রকাশ্যে এত আলোচনা-সমালোচনাও হয়নি।
বিচারপতি সিনহা ছুটি নিয়ে বিদেশ যাওয়ার পর তার বিরুদ্ধে দুর্নীতি, অর্থ পাচার, আর্থিক অনিয়ম ও নৈতিক স্খলনসহ সুনির্দিষ্ট ১১টি অভিযোগ ওঠার কথা সুপ্রিম কোর্টের পক্ষ থেকে জানানো হয়।
সর্বোচ্চ আদালত জানায়, ওই সব অভিযোগের ‘গ্রহণযোগ্য ব্যাখ্যা’তিনি না দিতে পারায় সহকর্মীরা তার সঙ্গে এজলাসে বসতে নারাজ।